Gallery

[All Post][slideshow]

Search This Blog

Powered by Blogger.

Blog Archive

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা || বাংলা রচনা

বাংলা রচনা / Rochona
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান / জাতির জনক / বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ / বঙ্গবন্ধু


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা



ভূমিকা : -


বিভিন্ন জাতির শ্রেষ্ঠ পুরুষ থাকে ۔তেমনি বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ পুরুষ হলেন "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান "۔হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে যার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। পাকিস্তান সৃষ্টির অল্প কিছু কাল পরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে বৈষম্য আর পরাধীনতার গ্লানি । ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা প্রশ্ন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে এ দেশের জনগণের দ্বন্দ্ব আরো সুস্পষ্ট হয়। 


নিপীড়িত জাতির ভাগ্যাকাশ যখন দুর্যোগের কালো মেঘ,তখনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবময় আবির্ভাব। অসাধারণ দেশপ্রেম ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে তিনি সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি তাই ভালোবেসে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে "বঙ্গবন্ধু "উপাধিতে ভূষিত করে। স্বাধীনতার পরে তাঁকে "জাতির পিতার "র۔মর্যাদায় অভিযুক্ত করা হয়।



"বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান" জন্ম ও শিক্ষা জীবন কথা :--


স্বাধীন বাংলাদেশের স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান   ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান মা সায়েরা খাতুন। দুই ভাই চার বোনের মধ্যে শেখ মুজিবর রহমান ছিলেন পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান। পারিবারিক আনন্দঘন পরিবেশে টুঙ্গিপাড়ায় তার শৈশব ۔কিশোরের দিনগুলো কাটে। গিমাডাংগা প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পরে তিনি গোপালগঞ্জ মিশন হাই স্কুলে ভর্তি হন এবং ওই স্কুল থেকে ১৯৪১ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দীর গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে এক সংবর্ধনা সভা শেষে ফিরে যাচ্ছিলেন ,পথরোধ করে দাঁড়ালেন শেখ মুজিবুর রহমান। স্কুলের ছাত্রবাস জরাজীর্ণ। ছাত্রাবাস মেরামতের জন্য অর্থ চাই। 


শেরে বাংলার প্রথম কিশোর মুজিবের সাহস ও স্পষ্ট বক্তব্যে আর জনহিতৈষী মনোভাবের  পরিচয় পেয়ে বিস্মিত হন । তিনি প্রশ্ন করলেন কত টাকা চাই। দৃপ্ত কণ্ঠে কিশর মজিব বললেন ۔বারোশো টাকা। শেরে বাংলা এ۔কে ۔ফজলুল হক সাথে সাথে টাকা ব্যবস্থা করলেন। বাল্যকাল থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান একটু অন্যরকম ছিলেন। একবার তিনি বাড়ির গোলার  ধান গ্রামের গরিব চাষিদের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে ছিলেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান এর কারণে জিজ্ঞাসা করলেন উত্তরে তিনি বলেছিলেন ,এবার চাষিদের জমির ধান সব বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। আকালে পড়েছে কৃষক। আমাদের মতো ওদের পেটে ও ক্ষুধা আছে ,ওরাও আমাদের মত বাঁচতে চাই। বাবা-ছেলের এই সৎ সাহস ও মহানুভবতা দেখে বেশ খুশি হলেন। এভাবে শেখ মুজিবুর রহমান গরিবের বন্ধু আর নিপীড়িত মানুষের হৃদয় জয় করেন। 


কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে আই এ এবং ও ১৯৪৬ সালে বিএ পাস করেন। ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান নেতা মুজিবে বিকশিত হতে থাকেন। ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের পর তিনি আইন পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন|



রাজনৈতিক জীবন কথা :--


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৩৯ সালে  মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় থেকে। স্কুলের ছাদ সংস্কারের জন্য একটি দল গঠন করা হয় নিজ নেতৃত্বে তিনি শেরে বাংলা এ۔কে ۔ফজলুল হকের নিকট দাবী পেশ করেন। ১৯৪০ সালে তিনি নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফাউন্ডেশনে এক বছরের জন্য যুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে এনট্রান্স কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন । 


কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ )পড়া থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন।  ১৯৪৩  সালে তিনি  বেঙ্গল মুসলিম লীগে যোগদান করার সুবাদে তিনি বাঙালি মুসলিম নেতা হুসাইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে আসেন। একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গড়ে তোলার আন্দোলন নিয়ে তিনি কোন ১৯৪৩  সালে বঙ্গীয়  মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। 


১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান পৃথক হওয়ার পর হিন্দু۔ মুসলিম দাঙ্গা শুরু হয়। মুসলিমদের রক্ষা করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দীর  সাথে বিভিন্ন  রাজনৈতিক তৎপরতা যুক্ত হন। এরপর ঢাকায় ফিরে এসে ১৯৪৮ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ  প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রধান ছাত্রনেতায পরিণত হন। 



ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান :--


মূলত বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি অর্থাৎ ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক তৎপরতা বিকাশ ঘটে।পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা ۔নাজিমুদ্দিন গণপরিষদে ১৯৪৮সালের ফেব্রুয়ারি ২৩ তারিখে অধিবেশনের উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বলার পরিপ্রেক্ষিতে  সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। 


তখন বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু  করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৪৮ সালে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হলো এর সঙ্গে তিনি যুক্ত হন। এ বছর ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে হরতাল পালনের সময় তিনি গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপারিশ করে পূর্ববঙ্গ পরিষদের একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে "۔এ মর্মে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে পূর্ব বাংলার নাজিম۔ উদ্দিন সরকার চুক্তিবদ্ধ হলে তিনি মুক্তি লাভ করেন। 



আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা সালর :-


সোহরাওয়ার্দী এবং মাওলানা ভাসানী কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ মুসলিম লীগ গঠন করার পর বঙ্গবন্ধু মুসলিম লীগ ছেড়ে দেন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে তিনি যুগ্ন সম্পাদকের পদ লাভ করেন এবং ১৯৫৩ সালের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। 



যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন করা :--


১৯৫৩ সালে দলের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি  ১৪ ই নভেম্বর সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অন্যান্য দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৫৪ সালের ১০ই মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৩৭ টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩ টি আসনে বিপুল ব্যবধানে জয় লাভ করে|যার মধ্যে ১৪৩ টি আসনে আওয়ামী লীগ  লাভ করেছিল। 


গোপালগঞ্জ আসনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল শক্তিশালী মুসলিম লীগ নেতা ওয়াহিদুজ্জামান। যাকে তিনি ১৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ১৫ মে বঙ্গবন্ধু কৃষি ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর ২৯ মে কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট ভেঙে দেয়  এবং ৩০মে ঢাকায় ফেরার পথে বন্দর থেকেই তাকে আটক করা হয়|দীর্ঘ ৭ মাস পর ২৩ শে ডিসেম্বর তাকে মুক্তি দেওয়া হয় । 


পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালের ৫ জুন আইন পরিষদের সদস্য মনোনীত হলো তিনি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে ২১ দফা দাবি পেশ করেন। 



ছয় দফা আন্দোলনঃ-


১৯৬৪ সালের জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত এক   বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর  রহমানকে পাকিস্তানের অন্যতম  প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মহাসচিব নিবাচিত করা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু সামপ্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধকল্পে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় এবং শাষণ বঞ্চনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বহুবার  গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন।


১৯৬৬ সালে তিনি পেশ করেন বাঙালি জাতীর ঐতিহাসিক মুক্তির সনদ ছয় দফা। এ সময় নিরাপত্তা আইন বরাবর গ্রেফতার হতে থাকেন।আজ গ্রেফতার হয়ে আগামীকাল  জামিনে মুক্তি   হলে সন্ধ্যায় তিনি আবার গ্রেফতার হন। এই রকম চলে পর্যায় ক্রমিক গ্রেফতা। তিনি কারারুদ্ধ জীবনযাপন করতে থাকেন।তাকে  প্রধান আসামি  করে দায়ের করা  হয় আগারতলার মামলায়।   


            

উনসওরের গণঅভ্যুত্থান ও বঙ্গবন্ধু:


আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা চলাকালীন সময়ে  কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি ৫ তারিখে দফা দাবি পেশ করে যার মধ্যে শেখ মুজিবের ছয় দফার সবগুলোই দফাই অন্তর্ভুক্ত ছি। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী ছাএ আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়। যা  পরবর্তীতে গণ আন্দোলনের রুপ নেয়। এই  গণ আন্দোলনই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নাম পরিচি। 


মাসব্যাপী চলতে থাকে আন্দোলন,কারিফউ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, পুলিশের  গুলিবর্ষণ হয়।  পরবর্তীতে এই আন্দোল চরম রুপ ধারণ করলে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান  তাদের রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে গোল টেবিলে বৈঠকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।


১৯৬৯ সালের ২৩ শে ফ্রেবরুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যা)  লক্ষ মানুষের এক নাগরিক সংবর্ধনায় তাঁকে"বঙ্গবন্ধু" উপাধিতে ভূষিত করা হয়।  স্বাধীন বাংলাদেশের স্হপতি হিসেবে রাষ্ট্রয়ভাবে বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের"জাতির জনক বা জাতির পিতা"হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্হায়ী মিশন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে তাকে" বিশ্ব বন্ধু"(ফ্রেন্ড অব দ্যা ওয়াল্ড) হিসেবে আখ্যা দেয়াা হয়।



স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধুঃ-


জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১ লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করার প্রতিবাদে শেখ মুজিবুর রহমান ৩ রা মার্চ অসহযোগ আনদোলনের ডাক দে। ৭  ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে স্মরণকালের বৃহওম জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেনঃ

           এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম

           এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম  


২৫ মর্চ কালরাত্রিতে পাকবাহিনীর হত্যাষজ্ঞে সারা বাংলাদেশের মানুষ বিক্ষোভেে ফেটে পড়। এমনি অবস্থায় গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তা ওয়ারলেসের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা  এম.এ. হান্নান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করলে সারাদেশে ব্যাপক আলাড়োন সৃষ্টি হয়।পূর্ব বাংলা রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবের হয়ে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা করে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রচার করে,ফলে বিশ্ব বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণা  সম্পর্কেজানতে পার।  


 

শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার ঘটনাঃ--


দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়। বিজয় দিবস বাঙালির বিজয় সূচিত হয়।বাংলাদেশের বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়া হয়।দেশে ফেরার পর ১২ ই জানুয়ারি তিনি "প্রধানমন্তী " হিসেবে শাসনভার গ্রহন করেন।এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার কাজে আত্ননিয়াগে করেন।কিন্তু পরাজিত হায়েনার দল তার সাফল্য ও বাঙালির উত্থানকে মেনে নিতে পারেনি।


তাই আবার শুরু হয় ষড়যন্ত্র। দেশ যখন সকল বাধা দূর করে এগিয়ে যাচ্ছিল,তখন দেশীয় ষড়যন্ত্রকারী ও আন্তর্জাতিক চক্রের শিকারেে পরিণত হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট সামরিক বাহিনীর তৎকালীন কিছু উচ্চাভিলাষী ও বিপথগামী সৈনিকের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। 



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অবদানঃ-


দ্বিধাবিভক্ত পরাধীন জাতিকে সুসংগঠিত করে স্বাধীনতার মন্ত্র উজ্জীবিত করে এবং সঠিক নেতৃত্ব দেওয়ার সহজ কাজ নয়। অথচ এই কঠিন কাজটি বঙ্গবন্ধু খুব সহজেই করতে পেরেছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে সবাই পরিচালনা করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান অসীম দক্ষতা ও যোগ্যতায়। তার ছিল মানুষকে উদবুদ্ধি করার মত অসাধারণ বজ্রকন্ঠ। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে তাঁর ছিল বিপুল খ্যাতি। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণে। অকৃত্রিম দেশপ্রেম, সাধারন জনগনের প্রতি গভীর ভালোবাসা, অমায়িক ব্যক্তিত্ব, উপস্থিত বুদ্ধি তাকে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা পরিণত করেছে। স্বাধীনতার পর তিনি খুব বেশিদিন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পাননি। যতটুকু সময় ক্ষমতায় ছিলেন, তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পূর্ণ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। 


১৯৭২ সালের ১২ ই জানুয়ারি ক্ষমতা লাভের পর কিছুদিনের মধ্যেই ভারতীয় বাহিনীর দেশত্যাগ করা এবং মুক্তি বাহিনী আত্মসমর্পণ করার ঘোষণা দেন। বিশ্বের ১০৪ টি দেশে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেন। বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ও ইসলামী সম্মেলন সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে বঙ্গবন্ধুর আমল।   ১৯৭২ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। তার সরকারের সময় ব্যাংক-বীমাসহ, শিল্প-কারখানা জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৭৪ সালে তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম বাংলায় বক্তৃতা দেন। তার নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছিল বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা বাঙালি জাতির জীবনে সূচনা করেছে এক নবদিগন্ত। আত্মপরিচয়হীন জাতি খুঁজে পেয়েছে তার অস্তিত্ব ও আত্মমর্যাদা।



বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গ্রন্থাবলীঃ- 


সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই দুটি খন্ডে তার আত্মকাহিনী লিখেন। যেখানে তিনি ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা করেছেন। মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা ও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচনা দুটি গ্রন্থে আকারে প্রকাশ করেন।


শারীরিকভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু হলেও তিনি অমর, অক্ষয়। ২০১২ সালে প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর বৈচিত্র্যময় জীবনের অসাধারণ এক খন্ডঅংশ "অসমাপ্ত আত্মজীবনী "। দেশপ্রেমিক প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে চির অম্লান হয়ে রয়েছে, একটি নাম-" শেখ মুজিবুর  রহমান"। কবি আনন্দদাস কবির ভাষায় বলাতে হয়।

 "যতকাল রবে পদ্মা -যমুনা -গৌরী- মেঘনা বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মজিবুর রহমান"


 

 উপসংহার ঃ-


বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে যার নাম উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত দীপ্যমান তিনি "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান "।তার দূরদশী, বিচক্ষণ এবং সঠিক নেতৃত্বই বাংলাদেশে স্বাধীন হয়েছিল। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী এবং স্বাধীন বাঙালি জাতির জনক। তিনি নিজের স্বার্থকে কখনোই প্রাধান্য দেন নি। জাতির কল্যাণের কথায় তিনি  সবসময় ভেবেছেন। জেল -জুলুম ও  নির্যাতনের কাছে তিনি কখনও মাথা নত করেননি।


সমস্ত জাতিকে তিনি মুক্তি ও স্বাধীনতার চেতনায় ঐক্যবদ্ধ উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তার আত্মত্যাগ জাতিকে মহান মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া বাঙালি জাতির  অস্তিত্বকে অস্বীকার করার শামিল।" বঙ্গবন্ধু "ও"বাংলাদেশ "আজ সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে এক-ও অভিন্ন না।  


সমাপ্তি 

No comments:

Biography

[Biography][grids]

All Song Lyrics

[All Song Lyrics][stack]